একটি ইসরাইলের একটি আদালত অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমের ১৪ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি বালককে মঙ্গলবার দুই মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে। ইসরাইলি পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ার অপরাধে তাকে এ সাজা দেয়া হয় বলে মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছে তার পরিবার।
ইসাউইয়া শহরের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ ওবাইদ ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের সাথে পশ্চিম জেরুসালেমের মস্কোভিয়া ডিটেনশন সেন্টারে যাওয়ার আগে পরিবারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নেয়।
আব্দুল্লাহর মা মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘ছয় মাসের কম সময়ের মধ্যে এটা তৃতীয় ঘটনা, যেখানে তার ছেলেকে ইসরাইলি কারাগারের আটকাদেশ অথবা গৃহবন্দিত্ব বরণ করতে হলো।’
ইসাউইয়া শহরের বাসিন্দারা বছরের পর বছর ইসরাইলি সামরিক বাহিনী ও পুলিশের হামলা, আক্রমণ ও গ্রেফতারের শিকার হচ্ছেন। একইসাথে এ শহরের ফিলিস্তিনিদের বাড়ি-ঘরও ধ্বংস করছে ইসরাইলি বাহিনী। ২০১৯ সালের জুন মাসে এ এলাকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলার সময় ওবাইদের পরিবারের এক সদস্য নিহত হয়েছিল।
২০১৯ সালে ইসরাইলি সংবাদপত্র হারেৎজ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ইসাউইয়া শহরে ইসরাইলি পুলিশের কর্মকাণ্ড হলো শহরটির ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে অত্যাচার ও জ্বালাতন করা।
আব্দুল্লাহ এর আগে নভেম্বরে আটক হয়েছিল। তখন সে বেথলেহেমের কাছে আবু গোনেইম পুলিশ স্টেশনে চার দিন ধরে ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেথের তদন্তে ছিল। সে ১০০০ শেকলে (ইসরাইলি মুদ্রা) বা মার্কিন ৩০৩ ডলার জরিমানা দিতে বাধ্য হয়। তাকে ১০ দিনের গৃহবন্দিত্বের আদেশ দেয়া হয়।
পরে সে দেখে তার গৃহবন্দিত্ব আরো পাঁচ মাসের জন্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। তদন্তের জন্য মার্চের শেষ দিকে তাকে পাঁচ দিন থাকতে হয় মস্কোভিয়া ডিটেনশন সেন্টারে।
আব্দুল্লাহ ওবাইদের মা মিডল ইস্ট আইকে বলেন, প্রতিদিন ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের ঘরে অভিযান, হামলা ও অনুসন্ধান চালায়। তারা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছুড়ে, স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করে, বাজে গন্ধযুক্ত পানি ছিটায়। তারা নারী, শিশু, যুবক ও বয়স্ক লোকদের এমনভাবে জ্বালাতন করে যাতে তারা প্রতিক্রিয়া দেখায়। যখন ইসরাইলি পুলিশ আমাদের প্রতিবেশীদের এমন করে অত্যাচারের জন্য হামলা করছিল তখন আমার ছেলে তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়েছে। আর আমার ছেলেকে ইসরাইলি পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া ও এর কাচ ভেঙ্গে দেয়ার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ওবাইদের মা আরো বলেন, মঙ্গলবার ইসরাইলি পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার আগে তাকে বিদায় দেয়ার পর্বটি ছিল খুবই বেদনাদায়ক। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টকর মুহূর্ত ছিল।