Tuesday, November 28, 2023

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমবিবিধসাহবায়ে কেরামের মর্যাদা

সাহবায়ে কেরামের মর্যাদা

একজন মুসলিমের জন্য সবচেয়ে বড় নিকৃষ্ট ও অপমানিত বিষয় হলো, সাহাবায়ে কিরামের কারও ব্যাপারে অপমানজনক কথা বলবে বা তাদের কারও সমালোচনা করবে, তাদের মর্যাদাহানিকর কোনো কথা বলবে। কেননা,
১- আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। [সূরা আত-তাওবাহ: ১০০; সূরা আল-মুজাদালাহ: ২২]
২- সাহাবায়ে কিরামের প্রত্যেকে আমাদের জন্য ঈমানের মানদণ্ড। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের ঈমান ঠিক আছে কিনা তা দেখার জন্য সাহাবায়ে কিরামের ঈমানের সাথে নিজেদের ঈমানকে তুলনা করে দেখতে বলেছেন। [সূরা আল-বাকারাহ: ১৩; সূরা বাকারাহ: ১৩৭]
৪- আল্লাহ তা‘আলা সাহাবায়ে কিরাম বলে এমনসব লোককে অন্তর্ভুক্ত করেছেন যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিল, সেটা যত সামান্য সময়ের জন্যই হোক না কেন। [দেখুন, সূরা মুহাম্মাদ ২৯; সূরা আল-হাদীদ: ১০; সূরা আল-আনফাল: ৬৪, ৭৫; সূরা আত-তাওবাহ: ৮৮; সূরা আত-তাহরীম: ৮]
৫- সাহাবায়ে কিরামের কারও ব্যাপারে অপমানজনক কথা বলার অর্থ হচ্ছে নিজেকে মুনাফিক হিসাবে দাঁড় করানো। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৭২, মুসলিম, হাদীস নং ৭৫]
৬- সাহাবায়ে কিরামের একজন জীবিত থাকলে তিনি যদি কোনো যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতেন, তবে আল্লাহ মুসলিমদের বিজয় দিতেন। [মুসলিম, ২৫৩২]
৭- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাথীদের মর্যাদা তাঁকে যারা দেখেনি এমন ভাইদের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করেছেন। [মুসলিম: ২৪৯]
৮- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে যারা দেখেছে, ঈমান এনেছে, সত্যায়ন করেছে, অনুসরণ করেছে তার জন্য জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। [মুসনাদে আহমাদ ৪/১৫২]
৯- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর যুগের লোকদেরকে উত্তম প্রজন্ম ঘোষণা করেছেন। [বুখারী, হাদীস নং ৩৬৫০, ৩৬৫১]
১০- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদেরকে উম্মতের জন্য আমানতদার ঘোষণা করেছেন। [মুসলিম, হাদীস নং ২৫৩১]
১১- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজের মাঠে সকলকে তাঁর বাণী পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। [বুখারী, হাদীস নং ১৭৩৯, ১৭৪৪১; মুসলিম: ২৯] এতে যারা কেবল ক্ষণিকের জন্য সে সভায় উপস্থিত ছিলেন তারাও অন্তর্ভুক্ত।
১২- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুসংবাদ জানিয়েছেন যে, সাহাবায়ে কিরাম থেকে সকলে রাসূলের হাদীস শুনবে। [আবু দাঊদ, হাদীস নং ৩৬৫৯]
১৩- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন সকলের চেহারাকে শুভ্রোজ্জ্বল করার দো‘আ করেছেন যারাই তাঁর হাদীস বর্ণনা করবে। [আবু দাঊদ, হাদীস নং ৩৬৬০] সুতরাং সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে যারা হাদীস বর্ণনা করেছেন তারা এদের সর্বাগ্রে।
১৪- সাহাবায়ে কিরাম কর্তৃক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখার ব্যাপারে কেউ ঈর্ষা করলে সাহাবায়ে কিরাম তাদের সাবধান করতেন যে, তোমরা তো জান না, হতে পারে তোমরা রাসূলের সাথে বেআদবীর কারণে জাহান্নামে যেতে। তাই তোমাদেরকে সে মর্যাদা দেয়া হয়নি। [বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ: ৮৭] সুতরাং বুঝা গেল আল্লাহ তাদেরকে বাছাই করে নিয়েছেন নবীর সাহচর্যের জন্য।
১৫- সাহাবায়ে কিরামের সাহচর্যের কারণে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু অনেককে শাস্তি প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকতেন। [ইবন হাজার, আল-ইসাবাহ ১/২০-২১]
এসব কিছু প্রমাণ করে যে, সাহাবী হওয়ার জন্য ঈমানের সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখাই যথেষ্ট। তাঁর সাথে অনেক দিন থাকার শর্ত কেউ করেনি।
ইমাম লালেকাঈ বলেন, যে কেউ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্য নিয়েছে, একবছর, একমাস, এক ঘণ্টা, অথবা তাঁকে একনজর দেখেছেন, অথবা তাঁর কাছে প্রতিনিধি হিসাবে এসেছেন, তিনিই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবী বলে বিবেচিত হবেন। যতটুকু সাহচর্য তিনি নিয়েছেন ততটুকুর জন্যই তিনি সাহাবী। তাদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে কম সাহচর্য পেয়েছেন তিনি যারা তাঁকে দেখেনি এমন সকলের চেয়ে উত্তম। যদিও পরবর্তীরা তাদের সকল আমল নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করে তারপরও যিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্য পেয়েছেন, তাঁকে দেখে দু’ চোখ ধন্য করেছেন, যদিও তা ক্ষণিকের জন্য হয়, তিনি সকল তাবে‘ঈ থেকে উত্তম, যদিও তাবে‘ঈ সব ধরণের কল্যাণমূলক আমল নিয়ে আসুক।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

1 × five =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য