আপনার অজানা নয় যে, বর্তমানে কিছু মুসলিম ভাই রাস্তা-ঘাটে ক্যামেরার সামনে মানুষকে ইসলাম নিয়ে নানা প্রশ্ন করছে। অনেকেই এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারছে আবার অনেকেই পারছে না। দেখা যাচ্ছে, তারা নারীদের চেহারা সহ ভিডিও রেকর্ড করছে। আবার অনেক সময় তারা নিজেরাই হাদিসের ভুল অনুবাদ করছে বা ইসলাম সম্পর্কে ভুল তথ্য দিচ্ছে। অত:পর এসব ভিডিও ইউটিউব ও ফেসবুকে আপলোড দেয়ায় লাখ লাখ মানুষ সেগুলো দেখছে। এ ব্যাপারে আপনার দিক নির্দেশনা চাই।
উত্তর:
সাধারণ জনগণের মাঝে ইসলাম শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা, ইসলাম সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং ইসলামি জ্ঞান বিষয়ে আমাদের সমাজের মুসলিমদের বাস্তব অবস্থা ফুটিয়ে তোলার উদ্দেশ্যে অনলাইন ভিত্তিক ‘স্ট্রীট দাওয়াহ প্রোগ্রাম’ করায় কোনও আপত্তি নেই। তবে কিছু বিষয় আবশ্যিকভাবে লক্ষণীয়। যথা:
◈ ১) মুখ মণ্ডল খোলা বা বেপর্দা নারীদের ভিডিও গ্রহণ ও তা প্রচার যাবে না। কারণ অধিক বিশুদ্ধ মতে নারীদের চেহারা পর্দার অন্তর্ভুক্ত।
◈ ২) ইসলাম সম্পর্কে ভুল, দুর্বল বা বিকৃত তথ্য পরিবেশন করা যাবে না। এ জন্য যে বিষয়ে সোশ্যাল এক্সপেরিমেন্ট ও ইন্টারভিউ নেয়া হবে সে বিষয়ে আগে থেকেই পর্যাপ্ত পড়াশোনা ও অথেনটিক সোর্স থেকে জ্ঞানার্জন করা জরুরি।
◈ ৩) নির্ভরযোগ্য তথ্য ও দলিল-প্রমাণ ছাড়া ফতোয়া প্রদান থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
◈ ৪) যাদের ইন্টারভিউ নেওয়া হবে অনুমতি ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ভিডিও প্রকাশ করা সংগত নয়। কারণ অনেক সময় সঠিক উত্তর দিতে না পারায় সে লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে লজ্জিত ও হেয় প্রতিপন্ন হতে পারে। এমন কি নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ারও সম্ভাবনা আছে। তবে অনুমতি থাকলে সমস্যা নেই।
◈ ৫) কোন ব্যক্তি প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হলে তাকে যেন অপমান বা হেয় প্রতিপন্ন না করা হয় তা অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ হয়ত বাস্তবসম্মত কোন কারণে বা পরিস্থিতির শিকার হয়ে সে ব্যক্তি ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারেনি। অথবা প্রশ্ন করার মুহূর্তে উত্তরটি ভুলে গিয়েছে। এমনটি হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
◈ ৬) ইখলাস তথা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কাজ করা। ইউটিউব বা ফেসবুকে ভিউ বাড়ানো এবং এর মাধ্যমে কিছু অর্থ উপার্জন করাই যেন মূল টার্গেট না হয়।
◈ ৭) আপলোড কৃত ভিডিও তে এড প্রদর্শনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা জায়েজ নেই। কেননা ইউটিউব এ প্রদর্শিত এডভারটাইজগুলো অধিকাংশই চ্যানেল মালিকের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সেক্ষেত্রে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের শরিয়া বহির্ভূত ও হারাম এড প্রদর্শিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
◈ ৮) এমন কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান এর স্পন্সরশীপ নেওয়া যাবে না যারা হারাম ব্যবসার সাথে জড়িত। অন্যথায় হারাম ব্যবসায়ী কর্মে সহায়তার কারণে গুনাহগার হতে হবে।
আল্লাহ তৌফিক দান করুন। আমিন।
▬▬▬▬◆◈◆ ▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দু্ল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।