Wednesday, November 29, 2023

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদৈনন্দিন খবরস্বামীকে নিরাপদে খুন করতে দরগায় ছাগল মানত স্ত্রীর!

স্বামীকে নিরাপদে খুন করতে দরগায় ছাগল মানত স্ত্রীর!

গত বছরের ২৩ মে রাতে মৃত্যুবরণ করেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাসির উদ্দিন। তবে মৃত্যুর ৯ মাস পর জানা গেল স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, বরং স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিকের হাতে খুন হয়েছিলেন তিনি। একটি হারিয়ে যাওয়া ফোনের কল রেকর্ডের সূত্র ধরে সামনে এসেছে এই হত্যারহস্য।

রেকর্ডে স্বামীকে নিরাপদে খুন করতে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে ফোন আলাপে ছাগল মানত করার কথা বলতে শোনা যায় ওই শিক্ষকের স্ত্রী ফাতেমা মিতুকে| প্রেমিক রাজুকে মিতু বলে- “দরগায় মানত করছি আল্লাহ কামডা যদি সফল হয়, কোনো সাক্ষী-প্রমাণ কিছু না থাকে, তাহলে হের লগে দরগাই যাইয়া এক সপ্তাহের মধ্যে একটা ছাগল কুরবানি দিমু, আল্লাহ কবুল করো।” 

বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের গয়েজ উদ্দিনের ছেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাসির উদ্দিন। তার স্ত্রী মিতুর কাছ থেকে নাসিরের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই তার মরদেহ দাফন সম্পন্ন করেন নাসিরের স্বজনরা।

এ ঘটনার ৯ মাস পর মিতুর পরকীয়া প্রেমিক রাজুর হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনে নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার কথোপকথনে রেকর্ডিং পায় নাসিরের স্বজনরা। পরে বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ নাসিরের স্ত্রী ফাতেমা মিতু (২৪) এবং মিতুর পরকীয়া প্রেমিক রাজু মিয়াকে (২০) গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার ফাতেমা মিতু বরগুনা পৌরসভার থানাপাড়া এলাকার মো. মাহতাব হোসেনের মেয়ে এবং রাজু মিয়া ঢলুয়া ইউনিয়নের গুলবুনিয়া এলাকার বারেক মিয়ার ছেলে।

এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, গত বছরের ২৩ মে ঈদুল ফিতরের আগের দিন রাতে নাসিরের মৃত্যুর খবর পান তার স্বজনরা। পরবর্তী সময়ে নাসিরের স্বাভাবিক মৃত্যু জেনে তাকে স্বাভাবিক নিয়মেই দাফন করে স্বজনরা। ঘটনার আট মাস ১৯ দিন পর তার স্বজনরা জানতে পারেন- নাসিরের স্ত্রী ফাতেমা মিতু ও তার পরকীয়া প্রেমিক রাজু নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কম্বল চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।

এ ঘটনায় নাসিরের বড় ভাই মো. জলিল হাওলাদার বরগুনা সদর থানায় অভিযোগ করলে তদন্তে নামে পুলিশ। পরে তদন্তকালে ঘটনার প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ায় নাসিরের স্ত্রী ফাতেমা মিতু ও তার পরকীয়া প্রেমিক রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফাতেমা মিতুর পরকীয়া প্রেমিক রাজুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বরগুনার একটি দোকানে চার্জ করাতে দেন রাজু। সেখান থেকে তার মোবাইলটি হারিয়ে যায়। হারিয়ে যাওয়া ফোনে নাসিরকে হত্যার পরিকল্পনা এবং পরবর্তী বিষয়ে রাজু ও মিতুর কথোপকথনের রেকর্ড জমা থাকে। পরে হারিয়ে যাওয়া ওই ফোনের কথোপকথন পায় নাসিরের স্বজনরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে থানায় অভিযোগ করেন নাসিরের বড় ভাই জলিল হাওলাদার। এ অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ভোররাতে অভিযান চালিয়ে রাজু ও মিতুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে নাসিরের বড় ভাই ও মামলার বাদী মো. জলিল হাওলাদার বলেন, ‘মিতুর কাছ থেকে আমার ভাইয়ের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর খবর পাই। তখন আমাদের কোনো সন্দেহ হয়নি। তাই স্বাভাবিক নিয়মেই আমরা নাসিরকে দাফন করি। এ ঘটনার ৯ মাসেরও বেশি সময় পর মিতু ও তার পরকীয়া প্রেমিক রাজুর মোবাইল ফোনে কথোপকথনের বেশ কয়েকটি রেকর্ড পাই আমরা। সেই রেকর্ডে নাসিরকে হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের কথোপকথন রয়েছে। তখন আমরা নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হই। এরপর পুলিশে অভিযোগ করা হলে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাসির এবং মিতু দম্পতি দুই সন্তানের জনক-জননী। তাদের এক মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে মেয়ে বড় এবং ছেলে ছোট। আট বছর বয়সী মেয়ের নাম নুসরাত জাহান এবং পাঁচ বছর বয়সী ছেলের নাম মো. নাঈম।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

nine + eighteen =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য