Saturday, October 5, 2024
No menu items!

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদাওয়াআকিদার উপর শিক্ষনীয় একটি গল্প

আকিদার উপর শিক্ষনীয় একটি গল্প

একজন শায়েখ কিছুদিন আকিদার ক্লাস করানোর পর ছাত্ররা খুবই বিরক্ত। এমনিতেই আকিদা খুবই কাঠখোট্টা, রসকষহীন, কঠিন টপিক। অনেক দিন ক্লাস হলো, আকিদা তো শিখাও হল। আর আকিদার ক্লাস ভালো লাগছে না। জানি জানি একটা ভাব চলে আসছে আরকি। সবাই চাচ্ছে শাইখ অন্য কোনো টপিকে ক্লাস নিক। আকিদা আর কত। ক্লাসে অমনোযোগী, গাছাড়া ভাব চলে আসছে সবার মধ্যে।
.
বিজ্ঞ শাইখ ব্যাপরটা বুঝতে পারলেন।
.
যথারীতি শাইখ পরেরদিন ক্লাসে আসলেন। কিন্তু কিছু না পড়িয়ে খুব মন খারাপ করে থাকলেন। শাইখের মন খারাপ দেখে ছাত্ররা খুব আগ্রহের সাথে জানতে চাইল, কী ঘটেছে?!
.
শাইখ মন খারাপ রেখেই বললেন, আসার পথে দেখলাম একলোক নতুন বাড়ি করেছে। সে বাড়িতে যেন খারাপ জিন বা বদ নজর ক্ষতি করতে না পারে, সে জন্য একটা মুরগী জবাই করে শয়তানের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে।
.
ছাত্ররা শুনে বলাবলি করলো, নাহ এইটা ঠিক করে নাই। এটা কোনো কথা হলো…. ইত্যাদি। এরপর ছাত্ররা যে যার মত স্বাভাবিক  হয়ে গেল।
.
পরেরদিন শাইখ আবার এসে মন খারাপ করে রইলেন। ছাত্ররা ফের জানতে চাইলো, কী হয়েছে?
.
শাইখ বললেন, শুনলাম ওই নতুন বাড়িতে লোকটা যিনা করেছে।
.
এই কথা শুনা মাত্রই ছাত্ররা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল, ক্লাস রুমে হৈ-হুল্লোড় শুরো হলো। এত বড় জঘন্য কাজ করতে পারল লোকটা, আজই এই বাড়ি জ্বালিয়ে দেব। লোকটা একটা শায়েস্তা করতেই হবে..….
.
শাইখ সবাইকে থামিয়ে ক্লাসরুমে শান্ত পরিবেশ আনলেন। এবার শান্ত ভাবে বললেন, বুঝতে পেরেছ তো তোমাদের আকিদার শিক্ষা কতটুকু হলো?
.
সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। শাইখ বললেন,
.
তোমাদের এই হাহাকার এই উত্তেজনা আফসোস হওয়ার কথা ছিল গতকালকে। আজকে সে জিনা করেছে কবিরাহ গুনাহ, কিন্তু গত কালকে সে আল্লাহর সাথে সরাসরি শিরক করেছে। আজকের কর্মে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামে যাবে না, আল্লাহ চাইলে ক্ষমাও করে দেবেন। কিন্তু গত কালকের শিরক অবস্থায় মারা গেলে সে চিরস্থানী জাহান্নামি। অথচ, কালকের ঘটনা শুনে তোমাদের মধ্যে তেমম কোনো প্রতিক্রিয়া হতে দেখা যায়নি।
.
ছাত্ররা নিজেদের ভুল বুঝতে পারল। শাইখের কাছে ক্ষমা চাইল, অনুতপ্ত হয়ে আবার আকিদার ক্লাস করানোর জন্য অনুরোধ করল।
====
.
বাস্তবতা এমনই। হাজারো পৃষ্ঠার রসালো সাহিত্য পড়তে সবাই পারে, পঞ্চাশ একশ পৃষ্ঠার আকিদার বই পড়তে চাই না। রসালো গল্পের ওয়াজ ঘন্টার পর ঘন্টা শুনা যায়, বিশ মিনিট আকিদার লেকচার শুনা বড়ই কঠিন।
.
আমাদের মনে হয় আকিদা আর এমন কী, আর ওয়াজে শুনলাম তো, ওমুক বই পড়লাম তো। জানি, জানলাম।
.
সার বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করেও আমরা আকিদা শেখা হচ্ছে না। শিখবে কীভাবে? বক্তারই তো আকিদা শিখা হয়নি। কথায়, কাজে, বয়ানে শিরক ঢুকে থাকে। লক্ষ শ্রোতার সামনে সুরে সুরে গাওয়া হচ্ছে আকিদা বিনষ্ট কারী নাশিদ গজল।
.
একটা বড় অংশ আকিদাকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। আরেক অংশ শিখতে চাচ্ছে, কিন্তু উস্তায পাচ্ছে না। আরেক অংশ শিখছে, কিন্তু ভুল শিখছে। আরেক অংশ শিখার উস্তায বা মাধ্যম পেয়েও অবহেলা করছে।
.
খুব অল্প সংখ্যক আলেম সঠিক আকিদা শিখতে পেরেছে, শেখাতে পারছে। খুব কমই শিখতে পারছে।
.
দিনরাত আমল করেও আকিদা সঠিক না হলে জাহান্নামে যেতে হবে। আসুন আমরা আকিদাকে গুরুত্বদিই। আকিদা নিজে শিখি, পরিবারকে শিখাই।
.
______________________________________
লেখক: মুগনিউর রহমান তাবরীজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

four × four =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য